৭৭ বছরে এসে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন সন্তু লারমার

নিজস্ব প্রতিবেদক
অবেশেষে নিজেকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া ভ্যাকসিন নিতে পারছিলেন না ৭৭ বছর বয়সী সাবেক এই গেরিলা নেতা। যে কারণে বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে আটকে যাচ্ছিলেন তিনি। ফলে ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও অবেশেষে নিজেকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করালেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৯ আগস্ট রাঙামাটি জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে চরম গোপনীয়তায় নিজেকে ভোটার তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত করতে ছবি তোলাসহ আনুসাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করেছেন তিনি। মূলত জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া করোনা টিকা নিতে না পারায় তিনি এই আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশন অফিসে কঠোর গোপনীয়তা ও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্যে দিয়ে তার ভোটার হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তিনি (সন্তু লারমা) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমাকে ফোন করে ভোটার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন নির্বাচন থাকায় তাকে ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ’

তবে গোপনীয়তার কথা অস্বীকার করে নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে যে কেউ বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আমাদের কাছে এলে তাকেই আমরা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবো এটাই স্বাভাবিক।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য সন্তু লারমা আবেদন করলেও এখনো তা হাতে পাননি তিনি, তবে ভোটার তালিকায় ইতোমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছেন।

১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সামরিক শাখা শান্তিবাহিনীর সাবেক প্রধান সন্তু লারমা সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। এরপর সরকার তাকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করলেও কখনোই বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেননি এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি। অংশ নেননি দেশের কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে।

Related Articles

Back to top button