লাল গামছা টাঙানোয় রক্ষা পেলেন ৮৫০ ট্রেনযাত্রী

রাজশাহী প্রতিবেদক
সকালে রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে কাজে যাচ্ছিলেন রাজশাহীর চারঘাটের দুই কৃষক জিয়াউর রহমান ও হাবলু মিয়া। এ সময় লাইনের একটি ভাঙা অংশ তাঁদের চোখে পড়ে। ঠিক ওই সময়ই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা বনলতা এক্সপ্রেসের আওয়াজ তাঁদের কানে ভেসে আসে।

তখন জিয়াউর ও হাবলু তাৎক্ষণিকভাবে লাইনের মাঝখানে নিজেদের লাল গামছা টাঙিয়ে দেন। এই লাল কাপড় দেখে ট্রেনটি থেমে যায়। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল সূত্রে জানা গেছে, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রায় ৮৫০ জন যাত্রী নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। রামচন্দ্রপুর এলাকায় পৌঁছালে কৃষক জিয়াউর ও হাবলুর টাঙানো লাল কাপড় দেখে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। পরে রেলের প্রকৌশলী ও মিস্ত্রিরা ঘটনাস্থলে এসে রেললাইন মেরামত করলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি আড়ানী রেলসেতুতে লাইন ভাঙার কারণে ঝুঁকিতে পড়েছিল উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন। সেদিন মো. লায়েব উদ্দিন নামের একজন গেটম্যান ট্রেনটি বাঁচিয়েছিলেন।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, গরমের সময়ের চেয়ে শীতকালে লাইন ফাটলের ঘটনা পাঁচ-ছয় গুণ বেশি ঘটে। আবার ফাটল ধরা ওই স্থানে স্টিলের স্লিপার ছিল। ওই স্লিপার চুরি হয়ে যাওয়ায় সেখানে কাঠের স্লিপার লাগানো হয়েছিল। কিন্তু দুই স্লিপারের মধ্যে ফাঁক বেশি ছিল। এ জন্য ট্রেন চলাচলের সময় চাপ লেগে লাইন ফেটে গিয়েছিল।

অসীম কুমার তালুকদার বলেন, লাইন ফাটলের খবর পেয়ে হেঁটে মিস্ত্রিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইনের পাশে ফিসপ্লেট লাগিয়ে দিয়েছেন। এদিকে রাজশাহী থেকে ট্রলিতে করে জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী তাঁর সহকর্মীদের নিয়েও ঘটনাস্থলে গিয়ে স্লিপার বসানোর কাজ করেন।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল সূত্রে জানা গেছে, ফাটল ধরা ওই লাইনের বয়স ৪৯ বছর। ওই রুটে ১৯৪৩ সালের কেনা লাইনও রয়েছে বলে জানা গেছে।

Related Articles

Back to top button