রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাবেই: যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আবারও বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাবেই। গোলা বিনিময়ের ঘটনায় ‘রাশিয়ার আগ্রাসন অত্যাসন্ন’ হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেন, সম্ভাব্য হামলাকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য মস্কো একটি অজুহাত প্রস্তুত করছে।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে অস্ত্র বিরতি লঙ্ঘন করে ইউক্রেনের সরকারি বাহিনী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে দফায় দফায় গোলা বিনিময় হয়। এদিকে এ পরিস্থিতিতে রাশিয়া ওইদিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। ইউক্রেন বাহিনী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে গোলা বিনিময়ের ঘটনাকে উল্লেখ করে পশ্চিমা দেশগুলোও দাবি করেছে, যে কোনো সময় ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দাবি করেন, রাশিয়া আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ইউক্রেনে হামলা করবে। হামলা চালাবে বলেই তারা ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সংখ্যা বাড়াচ্ছে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত করেছিলেন, ‘বুধবারই (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাবে। ’ কিন্তু সে সময় পার হয়ে গেলেও রাশিয়া এ পর্যন্ত কোনো হামলা চালায়নি। উল্টো রাশিয়ার তরফ থেকে বলা হয়, যুদ্ধ বাধানোর জন্য পশ্চিমা শক্তি অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা ‘মস্তিষ্ক বিকৃতি’তে ভুগছে। এ ছাড়া রাশিয়া আবারও বলেছে, রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলা চালানোর কোনো ইচ্ছা নেই। বরং রাশিয়া চায় পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো জোটের বিস্তার রোধ করা হোক এবং ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনা তৈরি বন্ধ করা হোক। অপরদিকে মার্কির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেনে কী করতে চায়- তার একটা বিহিত হওয়া দরকার। ’
এদিকে বড় একটি ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজে সশরীরে উপস্থিত থেকে এই মহড়া পর্যবেক্ষণ করবেন। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে এই মহড়া শুরু হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
ইউক্রেন যেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়, মূলত সেজন্য দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির করতেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। কারণ, ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে, এবং ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, পার্স টুডে