মেয়াদ পার হলেও শেষ হয়নি ২০ কিমি সড়কের নির্মাণকাজ

বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি থেকে রুমা উপজেলা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। এতে ব্যয় ধরা হয় ৪৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ পার হলেও শেষ হয়নি এ সড়কের নির্মাণ কাজ। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য এবং উপজেলা ভিত্তিক সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর থেকে রুমা উপজেলা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পল্লী সড়ক নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে ৪৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের অক্টোবর তেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করে। কিন্তু মেয়াদ পার হলেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোয়াংছড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকা কার্পেটিং হয়েছে। দুর্নিবার পাড়া থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার ব্রিক সলিনের কাজ শেষ হলেও কার্পেটিং বাকি। বালু পাহাড় এলাকায় কার্পেটিং শেষ হলেও বাকি ড্রেনের কাজ। দেবতা পাহাড় এলাকায় দৈর্ঘ্য ২৬ ও প্রস্থ ৬ ফিট আকারের সেতু কার্পেটিং হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় তিন কিলোমিটার পাহাড়ের মাটি কাটা ছাড়া তেমন কোনো কাজই করেনি ঠিকাদার। চান্দাক পাড়া ও সাইফু পাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় সেতুটি সম্পূর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও অর্ধনির্মিত করে ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন জায়গায় কার্পেটিং ও ড্রেন ফেটে যাওয়ার চিত্র দেখা যায়। সড়কের পাশে ১০০ টি সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল (স্ট্রিট লাইট) স্থাপনের কথা থাকলেও রয়েছে ৩৬টি। এর ভেতর নষ্ট হয়ে আছে কয়েকটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, রোয়াংছড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার কার্পেটিং ভালো হলেও অধিকাংশ কাজের মান খুবই নিম্নমানের। বিশেষ করে রাঙ্গামাটির ঠিকাদার লিটনের কাজ। এছাড়া ঠিকাদার কামাল হোসেন (লেস কামাল) কাজ শুরু করেছে মাত্র। ফলে নির্মাণাধীন রোয়াংছড়ি-রুমা সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবদুল আজিজ বলেন, ‘করোনা মহামারি ও নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্প মেয়াদকাল ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত এবং প্রকল্প ব্যয় ৫০ কোটি থেকে ৭১ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।
দেবতা পাহাড় এলাকায় (রোয়াংছড়ি ও রুমা সড়কের মধ্যবর্তী এলাকা) দেরিতে কাজ শুরু করার বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল আজিজ বলেন, কাজটি চলতি বছরের জুন মাসে টেন্ডার হয়েছে এখন কাজ চলছে। এছাড়া এ প্রকল্পটি আমি নিজেই তদারকি করছি। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার বা অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।
স্ট্রিট লাইটের বিষয়ে তিনি বলেন, কয়েকটি ব্রিজের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় লাইট বসানোর কাজ শেষ করা হয়নি এবং এরই মধ্যে যে লাইটগুলো নষ্ট হয়েছে সে গুলো দেখে মেরামতের জন্য টেকনিশিয়ান পাঠানো হবে।