ব্যাপক হারে বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের চাহিদা
অনলাইন ডেস্ক

চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়ে প্রতিদিন ২ কোটি ৬০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হবে। চলতি প্রান্তিকে প্রতিদিন ৭ লাখ ১০ হাজার জ্বালানি তেলের চাহিদা আছে। বুধবার প্যারিসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি ফেব্রুয়ারির জ্বালানি তেলের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। উড়োজাহাজ চলাচল বৃদ্ধি ও চীনের বর্ধিত চাহিদার কারণে এমনটা ঘটবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ২০২৩ সালে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল হারে বাড়বে। ২০২২ সালে এ হার ছিল দিনপ্রতি ২৩ লাখ ব্যারেল।
সংস্থাটি জানায়, চাহিদা বাড়লেও জ্বালানি তেলের মজুদের তুলনায় তা একেবারেই অকিঞ্চিৎকর। ১৮ মাসের তুলনায় বর্তমানে জ্বালানি তেলের মজুদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তবে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সমস্যায় থমকে আছে জ্বালানি তেল সরবরাহ।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের সর্ববৃহৎ রফতানিকারক দেশ রাশিয়া। তাদের জ্বালানি তেলের উৎপাদন এখনো যুদ্ধপূর্ব অবস্থার মতোই সমৃদ্ধ। কিন্তু নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রফতানিতে। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রফতানি দিনপ্রতি পাঁচ লাখ ব্যারেল হারে কমেছে। জ্বালানি তেলের ওপর জি৭ প্রাইস ক্যাপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি। ৫ ফেব্রুয়ারি জি৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রাইস ক্যাপের ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছে। প্রিমিয়ামে ব্যবসা হওয়া ডিজেলের মতো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার প্রাইস ক্যাপ নির্ধারণ করা হয়। আর নাপথা ও ফুয়েল অয়েলের মতো ডিসকাউন্টে ব্যবসা হওয়া জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেল সর্বোচ্চ ৪৫ ডলার মূল্য ধার্য করা হয়। এসব কারণে ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের রফতানি ২৭০ কোটি ডলার কমে ১ হাজার ১৬০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি জানায়, এ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ব্যারেল নতুন গন্তব্যের দিকে ছুটবে। নতুন গন্তব্য বলতে ভারত ও চীনের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ সংস্থার দেয়া তথ্যানুসারে, ফেব্রুয়ারিতে ভারত তাদের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির ৪০ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে। চীনের মোট অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির ২০ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। অন্যদিকে একই সময়ে রাশিয়ার মোট অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানির ৭০ শতাংশ এ দুটি দেশেই রফতানি হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি। এ সংস্থার মতে, যদিও মার্চে রাশিয়ার উৎপাদন প্রতিদিন পাঁচ লাখ ব্যারেল হারে কমেছে, কিন্তু ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ খুব সহজেই এর চাহিদাকে মেটাতে পারবে। সংস্থাটি জানায়, বর্তমানে জ্বালানি তেল মজুদ করলে তা চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সংঘটিত হতে যাওয়া জ্বালানি তেলের ঘাটতিকে প্রশমিত করবে। সে সময় চীন বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের চাহিদাকে রেকর্ড পর্যায়ে নিয়ে যাবে বলে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির পূর্বাভাসে জানা যায়। বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। তাছাড়া অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের শীর্ষ আমদানিকারক দেশটি। তিন বছর ধরে জিরো কভিড পলিসি চালু রাখার পর জানুয়ারিতে চীন তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে।