বিদ্যুতের অপ্রতিযোগিতামূলক ক্রয় চুক্তিগুলোই কি রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বোঝা

২০১০ সাল থেকে অপ্রতিযোগিতামূলক ও অসম ক্রয় চুক্তি পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টের (পিপিএ) ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এসেছে অনেকগুলো আইপিপি। এসব চুক্তি সম্পাদনের প্রক্রিয়াটিও অনেকটাই অস্বচ্ছ ও গোপনীয়। এসব পিপিএর ভিত্তিতে আইপিপিগুলো ঝুঁকি ও প্রতিযোগিতামুক্ত পরিবেশে ব্যবসা করার সুযোগ পেলেও বিদ্যুৎ খাতের একক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) লোকসান ও দায়ের বোঝা বেড়েছে। অর্থ না থাকায় এখন আবার আইপিপিগুলোর পাওনাও পরিশোধ করতে পারছে না সংস্থাটি।
বিদ্যমান পিপিএ কাঠামোর আওতায় মোটাদাগে পাঁচ ধরনের শর্ত আইপিপিগুলোকে বিপুল পরিমাণ মুনাফার নিশ্চয়তা দিলেও বিপত্তি বাড়াচ্ছে বিপিডিবির। টেক অর পে (টিওপি) শর্তের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পাচ্ছে যেকোনো পরিস্থিতিতে স্থাপিত সক্ষমতার ভিত্তিতে ক্যাপাসিটি চার্জ পাওয়ার নিশ্চয়তা। কেন্দ্রগুলোর জ্বালানির ব্যয় সংস্থানের ভারটিও বর্তাচ্ছে বিপিডিবির ওপরই। বিদ্যুতের দাম টাকায় পরিশোধ করা হলেও ট্যারিফ নির্ধারণ হচ্ছে ডলারে। আবার সভরেন গ্যারান্টির মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে নেয়া বিদেশী ঋণের দায়ভারও নিজের ওপর টেনে নিচ্ছে রাষ্ট্র। এতে আইপিপিগুলো খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচলেও ভারী হয়ে উঠছে রাষ্ট্রীয় দায়ের বোঝা। এর সঙ্গে সঙ্গে কর অব্যাহতি ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের সুবিধাও পাচ্ছে আইপিপিগুলো।
আইপিপি খাতের উদ্যোক্তাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে মুনাফার নিশ্চয়তা থাকলেও চাপ বাড়ছে বিপিডিবি ও সাধারণ ভোক্তাদের ওপর। বর্তমানে গোটা বিশ্বেই বিদ্যুতের এ ধরনের অসম-অপ্রতিযোগিতামূলক ক্রয় চুক্তি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে পুরনো চুক্তিগুলোকে পর্যালোচনা শুরু করেছে। কেনিয়া ও ফিলিপাইনসহ বেশ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে পুরনো চুক্তি পর্যালোচনাসহ সার্বিক পিপিএ কাঠামোয় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। অনেক দেশে এ পরিবর্তনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীনও রয়েছে। এসব দেশেও নতুন ক্রয় চুক্তিতে টিওপি শর্তের পরিবর্তে এখন টেক অ্যান্ড পে (টিএপি) শর্তকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বেশি। এ শর্ত অনুযায়ী অভিহিত সক্ষমতা নয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয় প্রকৃত সক্ষমতার (প্লান্ট ফ্যাক্টর) ওপর। আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালানি সংস্থানে ব্যর্থ হলে বা নিজস্ব কোনো পরিচালনগত সমস্যার কারণে উৎপাদন চালু রাখতে না পারলে ক্রেতা সংস্থার ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধেরও বাধ্যবাধকতা থাকে না।
গত দশকের শুরুতে দেশের বিদ্যুৎ খাতের বড় সমস্যা হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছিল উৎপাদন সক্ষমতার বিষয়টি। সে সময় খাতটিতে বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা দেয়া শুরু করে সরকার। কিন্তু এখন এসব সুযোগ-সুবিধাকে গোটা অর্থনীতির জন্য বড় বোঝা হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পর্যবেক্ষকরা। তাদের ভাষ্যমতে, এসব শর্ত নিরন্তর দেউলিয়াত্বের হুমকিতে থাকা প্রতিষ্ঠান বিপিডিবির লোকসানের বোঝাকে ক্রমেই আরো ভারী করে তুলেছে। ভর্তুকিতে টিকে থাকা প্রতিষ্ঠানটি এখন কেন্দ্রগুলোর জ্বালানির মূল্যসহ পাওনাও পরিশোধ করতে পারছে না।
বিপিডিবির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সংস্থাটির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ এখন ৬৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এজন্য প্রধানত সংস্থাটির আইপিপি-নির্ভরতাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ সংস্থাটির ব্যয় হয়েছে ৭৪ হাজার ২২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে আইপিপি থেকে কেনা হয়েছে ৪৯ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে গত অর্থবছরে বিপিডিবির ক্রয়কৃত বিদ্যুতের ৬৬ শতাংশেরও বেশি এসেছে আইপিপি থেকে। এ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন বাবদ সংস্থাটির ব্যয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের তুলনায় ২২ হাজার কোটি টাকা। বর্ধিত এ ব্যয়ের ৯৬ শতাংশই খরচ হয়েছে আইপিপি থেকে বিদ্যুৎ কেনায়। আইপিপিগুলোকে দেয়া অর্থের বড় অংশই আবার ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে পরিশোধিত অর্থ।
এর মধ্যেই আবার নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হচ্ছে। চলতি পঞ্জিকা বর্ষেই নতুন ২৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসার কথা, যার ১৩টিই আইপিপি। বিদ্যমান পিপিএ কাঠামো অনুযায়ী লোকসানের ভারে ভারাক্রান্ত অবস্থায়ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাবদ ব্যয় টানতে হবে বিপিডিবিকে। যদিও প্রতিষ্ঠানটি নিজেই চলছে সরকারি ভর্তুকির ওপর নির্ভর করে। গত অর্থবছরেও সরকারের কাছ থেকে সংস্থাটিকে ভর্তুকি নিতে হয়েছে ২৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা।
আবার আইপিপিগুলোর জ্বালানিসংক্রান্ত দায়ভারও নিজ ঘাড়ে তুলে নিয়েছে বিপিডিবি। বিদ্যুতের বিল দেয়ার সময় এর সঙ্গে জ্বালানির মূল্যটিও যুক্ত করে দিচ্ছে আইপিপিগুলো। ফলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে জ্বালানি সংগ্রহজনিত যাবতীয় ঝুঁকি বহন শেষ পর্যন্ত বিপিডিবিকেই বহন করতে হচ্ছে।
সক্ষমতা হারিয়ে ভর্তুকি পাওয়ার পরও সংস্থাটি এখন আইপিপিগুলোর পাওনা টাকাও পরিশোধ করতে পারছে না। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সংস্থাটির কাছে আইপিপিগুলোর চার মাসের পাওনা বকেয়া রয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা। আইপিপি উদ্যোক্তাদের দাবি, বিপুল পরিমাণ টাকা আটকে পড়ায় তারা এখন জ্বালানির সংস্থানসহ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় পরিচালন ব্যয় নির্বাহ করতে পারছেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বিদ্যুৎ খাতে মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি পুরোপুরি প্রতিযোগিতাহীন। বাজার নয়, বিপিডিবির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করছে আইপিপিগুলো। আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো স্থাপন হচ্ছে শুধু উদ্যোক্তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে। এক্ষেত্রেও কোনো ধরনের টেন্ডার বা প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা অনুসরণ করা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম প্রাচ্যবাণীকে বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জ থেকে বিপিডিবির বেরিয়ে আসতে হলে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলোর ওপর ছেড়ে দিতে হবে। তারাই ঠিক করবে তাদের কতটুকু বিদ্যুৎ লাগবে এবং সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে তারা সেভাবেই চুক্তি করবে। এককভাবে বিপিডিবি ক্রেতা হিসেবে থাকলে লোকসান বেড়েই যাবে। সঞ্চালনের ক্ষেত্রে বিতরণ কোম্পানিগুলো যতটুকু ব্যবহার করবে তার ওপর চার্জ আরোপ হবে। এভাবে ব্যয় কমাতে পারে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সব মিলিয়ে ক্রয় চুক্তির অপ্রতিযোগিতামূলক শর্ত দেশের বিদ্যুৎ খাতের উৎপাদক-ক্রেতা-ভোক্তা সবাইকে বিপাকে ফেলার পাশাপাশি বিপিডিবিকেও এক প্রকার দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী বিডি রহমতউল্লাহ প্রাচ্যবাণীকে বলেন, এগুলো নব্বইয়ের দশকে ছিল না। পিপিএতে এ ধরনের শর্ত যুক্ত করা হয়েছে ২০১০ সালের দিকে। এ শর্তের মধ্যেই মূলত ক্যাপাসিটি চার্জকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো যুক্ত করে বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে মুনাফা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। আর তা করতে গিয়ে আজকে বিপিডিবি দেনার দায়ে ডুবছে।
বিপিডিবি আইপিপিগুলোর কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনে পিপিএতে নির্ধারিত মূল্যে। এক্ষেত্রে বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি মূল্য নির্ধারণ করা হয় মার্কিন সেন্টে (ডলারের ক্ষুদ্রতম একক, ১০০ সেন্ট = ১ ডলার) প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা হিসেবে। তবে তা পরিশোধ করা হয় বাংলাদেশী টাকায়। বিদ্যুতের ক্রয়মূল্যকে এভাবে ডলারের বিনিময় হারের সঙ্গে বেঁধে দেয়ার বিষয়টিকে অভিহিত করা হয় ডলার ইনডেক্সেশন হিসেবে। এ অনুযায়ী ডলারের বিনিময় হার বাড়লে বিদ্যুৎ ক্রয়ে বিপিডিবির ব্যয়ও বেড়ে যায়। শুধু দেশী উদ্যোগে গড়ে ওঠা ৩০ মেগাওয়াটের কম সক্ষমতার আইপিপির ক্ষেত্রে এ নিয়ম অনুসরণ করা হয় না।
ডলার ইনডেক্সেশনের নিয়ম অনুযায়ী, ডলারের বিনিময় হার যখন ৮৫ টাকা ছিল, সে সময় প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ সেন্টে বিক্রির জন্য চুক্তিবদ্ধ আইপিপিকে বিপিডিবির প্রতি ইউনিটে পরিশোধ করতে হয়েছে সাড়ে ৮ টাকা করে। বর্তমানে সে জায়গায় পরিশোধ করতে হচ্ছে ১০ টাকার বেশি। পিপিএগুলো বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের উত্থান-পতনজনিত ঝুঁকিও বিপিডিবি তথা রাষ্ট্রের ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অপ্রতিযোগিতামূলক পিপিএগুলোর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হলেও এগুলো সম্পাদনের সময়ে দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারছে না বিদ্যুৎ খাত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তীতুমীর এ প্রসঙ্গে প্রাচ্যবাণীকে বলেন, ‘আমরা অনেক কিছু অ্যাডহক ভিত্তিতে করছি। মূল বিষয় হচ্ছে বিদ্যুৎ খাতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনেক বিষয় যোগ-বিয়োগ বা হিসাবনিকাশ করছি না। যেমন ক্রয়চুক্তিতে মূল্য নির্ধারণ টাকায় না করে ডলারে করার প্রভাব কেমন তা ভাবা হচ্ছে না। আমরা যদি আগামীর অর্থনীতির কথা চিন্তা করি তাহলে তো এসব করা যায় না। এখানে ঝুঁকি বিরাট।’
বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বিদেশী ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সভরেন গ্যারান্টির সুবিধা পাচ্ছেন আইপিপি উদ্যোক্তারা। এক্ষেত্রে তারা কোনো কারণে ঋণের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে তা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করার গ্যারান্টি সরকারের। বর্তমানে বিদ্যুৎ খাতে এ ধরনের ঋণের বিপরীতে সরকারের দেয়া গ্যারান্টির পরিমাণ ৪১ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা, যা দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের ৫৬ শতাংশেরও বেশি।
এ মুহূর্তে সরকারি গ্যারান্টির বিপরীতে বিদেশী ঋণে বাস্তবায়নাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৬। এর মধ্যে বৃহত্তমগুলো হচ্ছে পটুয়াখালী ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়াল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
আবার এসব পিপিএ চুক্তির তথ্য সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বচ্ছতা ধরে রাখার তাগিদে যেকোনো পিপিএ আংশিকভাবে হলেও উন্মুক্ত করার নিয়ম রয়েছে। এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রাচ্যবাণীকে বলেন, সরকারি ক্রয় বিধিমালাকে পাশ কাটিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় এসব চুক্তি করা হয়েছে। যেখানে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। ফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জায়গাটি উপেক্ষিত। এসব প্রকল্পের বিষয়ে জনগণের জানার সুযোগ নেই, যে কারণে এখন এসব চুক্তিতে নানাবিধ অস্বচ্ছতা পাওয়া যাচ্ছে।
আয়কর হিসেবেও বিপুল পরিমাণ ছাড় পাচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো। ছাড় পাচ্ছে যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক পরিশোধে। ২০২০ সালে ঘোষিত এক প্রজ্ঞাপনে সরকারের পক্ষ থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে উৎপাদনে আসা সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুরোপুরি কর অব্যাহতির ঘোষণা দেয়া হয়। ২০৩৪ সাল পর্যন্ত এ সুবিধা পাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো। এছাড়া এসব কেন্দ্রের বিদেশী কর্মীদেরও বাংলাদেশে আগমনের পর থেকে প্রথম তিন বছর পর্যন্ত বেতনের ওপর তিন বছরের আয়কর ছাড় দেয়া হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুতের নীতি ও গবেষণা সংস্থা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন প্রাচ্যবাণীকে বলেন, ‘বিদ্যুতের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এরই মধ্যে যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে সেগুলো নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। যেগুলো খুবই প্রয়োজনীয় সেগুলো “নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্টের” ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিদ্যুতে ভর্তুকি তুলে দেয়া হচ্ছে। ফলে ধাপে ধাপে আমরা ব্যয় কমানোর দিকে যাচ্ছি।’