বাবা জীবিত না মৃত, জানে না জুয়েলের দুই সন্তান

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো. জুয়েল। ২০১৭ সাল থেকে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ক্রেনবাহী গাড়ি চালাতেন। ৪ জুন (শনিবার) রাতে যখন আগুন লাগে তখন স্ত্রীকে ফোন করে সে খবর জানিয়েছেন। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ। তিনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, তাও জানে না পরিবারের সদস্যরা।

তার খোঁজ পেতে দুই সন্তানকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে অপেক্ষা করছেন স্ত্রী জেসমিন আকতার সনি। সোমবার সকালে তিনি অপেক্ষা করেছিলেন ডিএনএ নমুনা দেওয়ার।

জেসমিন আকতার সোমবার সকালে বলেন, শনিবার রাত ১০টার দিকে ফোন করে জুয়েল জানায়, ডিপোতে আগুন লেগেছে। এরপর লাইন কেটে যায়। এটাই ছিল শেষ কথা। পরে অনেক খুঁজেও স্বামীর খোঁজ পাইনি।

জেসমিন আকতার জানান, কোথায় স্বামীর খোঁজ না পেয়ে চমেকে সন্তানদের নিয়ে এসেছেন ডিএনএ নমুনা দেওয়ার জন্য।

কনটেইনার ডিপোর আগুনের পর থেকে নিখোঁজ হওয়া মো. জুয়েলের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে। তাদের দুই সন্তান বিজয় (৮) ও লামিয়া (২) এখন বাবার অপেক্ষায়।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে যাদের শনাক্ত করা যায়নি তাদের স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ সোমবার (৬ জুন)। এরপরই স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ডিএনএ সংগ্রহে এরই মধ্যে বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে জেলা প্রশাসনে সহায়তা সেলের পাশে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহযোগিতায় এ বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান জানিয়েছেন, নিহতদের মাঝে ২১ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এদের মাঝে রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অনেক মরদেহ শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তাই নিহতদের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ টেস্ট করা হবে।

এদিকে আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একযোগে কাজ করছেন। ঘটনাস্থলে যৌথভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন, র‍্যাব, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি ও স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা।

Related Articles

Back to top button