বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে খালেদার ব্যাপারে মহানুভবতা দেখান

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজনীতির অতীতের ভুল-ভ্রান্তি ভুলে একান্তভাবে মানবিকতার দৃষ্টান্তস্বরূপ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদন জানিয়েছে পাঁচটি দল।
রোববার (২১ নভেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের নেতৃত্বে পাঁচ দলের শীর্ষ নেতারা এ আবেদন জানান।
সাক্ষাৎ শেষে সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আসার উদ্দেশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের নিকট আবেদন করা। সেটি হলো বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, তাকে বিদেশে পাঠানো।’
তিনি বলেন, ‘লিখিত আবেদন জমা দিয়েছি, মুখেও ব্যাখ্যা করেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের কথাগুলো শুনেছেন। তিনি তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবেন বলে আশ্বস্তও করেছেন।’
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এত বেশি গুরুতরভাবে অসুস্থ যে, দেশে চিকিৎসার মাধ্যমে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট ব্যক্তিগতভাবে আবেদন, তিনি অনুমতি দিলে হয় সরকার বন্দোবস্ত করে তাকে বিদেশে পাঠাবে অথবা দল বন্দোবস্ত করে পাঠাবে।’
তিনি বলেন, ‘এই কাজটি যদি করা হয় আমরা মনে করি, এটা আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিকতার, উদারতার ও সৌজন্যবোধের দৃষ্টান্ত হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে।’
‘মন্ত্রীকে আমরা এটাও বলেছি, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত অন্তত আমি ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষী, বঙ্গবন্ধু কত উদার ও মহান ছিলেন। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের ভুলভ্রান্তি তিনি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা; আপনি বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে মহানুভবতা প্রদর্শন করুন।’
‘আমরা বলেছি—কোনো রেফারেন্স, কোনো আইন, কোনো দৃষ্টান্তের প্রয়োজন নেই। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এককভাবে সিদ্ধান্ত নিন। কারণ আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যেই উনাকে (খালেদা জিয়া) শুভেচ্ছা প্রদর্শন করেছেন। তিনি জেলখানার বাইরে নিজের গৃহে আছেন। আপনার শুভেচ্ছা আরেক ধাপ বাড়িয়ে দিলে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন।’
২০ দলের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এসেছেন কি না—এমন প্রশ্নে সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘না, আমরা এসেছি পাঁচটি দল বিবেচনায়। তবে অবশ্যই বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ অবহিত আছেন। উনারা আসবেন কি না, সেটা আমরা বলতে পারছি না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপির) চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা ও লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম।