প্রকৌঃ শাহজাহান ২২ বছর একই ডেস্কে : শত কোটি টাকার মালিক!

জনতা ব্যাংক দুর্নীতিবাজদের অভয়ারণ্য


বিশেষ প্রতিবেদন
বিগত ৫-৭ বৎসরে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকে স্মরণকালের নজিরবিহীন বিসমিল্লাহ গ্রুপ, হলমার্ক গ্রুপ ও বেসিক ব্যাংক কেলেংকারীতে সরকারের ইমেজ সংকটের পাশাপাশি রাষ্ট্রয়ত্ত্ব ব্যাংক সমুহ যে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে তা থেকে বের হয়ে আসতে অধিকাংশ ব্যাংকপ্রশাসন আজও হিমসিম খাচ্ছেন। সততার প্রতিচ্ছবি স্বনামধন্য চেয়ারম্যান প্রফেসর এস.এম মাহফুজুর রহমান এবং রাষ্ট্রয়ত্ত্ব ব্যাংকসমূহে কর্মরত একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা এমডি আব্দুস ছালাম আযাদের কর্ম দক্ষতা ও সততার কারণে ব্যাংক লুটেরাদের সকল প্রকার হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে শীর্ষে অবস্থান থাকলেও কতিপয় দুনীতিবাজের কারণে সকল অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
গত জুন ২০২১ অর্ধ বৎসরে জনতা ব্যাংকের লাভ নেমে এসছে অর্ধেকে এবং অব্যবস্থাপনা ও লুটেরাদের কারণে এ বৎসর জনতা বিশাল অংকের লোকসান হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। শুধু জনতা ব্যাংক ভবন শাখায়ই খেলাপী ঋণ প্রায় ১৪ হাজার কোট টাকা। এ শাখার বড় খেলাপী অ্যাননটেক্স গ্রুপের দেনা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা এবং থার্মেক্স গ্রুপের দেনা প্রায় ১৫০০ কোট টাকা যা আদায়ের কোন সম্ভাবনা নেই। নতুন লুটপাটের আয়োজন চলছে দিলকুশা শাখায়।
জনতা ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হলেও এ ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ ব্যাংকাররা রয়েছেন মহা আনন্দে। লুটেরা গ্রাহকদের সাথে হাত মিলিয়ে তারা নিজেরাও কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন গ্রাহকদের কাছ থেকে। বর্তমান প্রশাসন বেশ কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যাংকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও অনেকেই রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত দুর্নীতিবাজ শিল্পঋণ বিভাগের প্রকৌশলী শাহজাহান । তিনি প্রায় ৩২ বৎসর চাকরি জীবনের ২২ বৎসর কাটাচ্ছেন হেড অফিসের শিল্পঋণ বিভাগে। এসএমই বা শিল্পঋণ বিভাগের বাইরে তার কোনো দিন চাকরি করতে হয়নি। বিগত ২২ বৎসর যাবত জনতা ব্যাংকের কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রায় পুরোটাই হয়েছে তার হাত দিয়ে।
প্রকৌশলী শাহজাহান রাজি তো সব রাজি! গার্মেন্টস, নীট, স্পিনিং, ডাইং, ওয়াশিং, বড় শিল্প বা ছোট শিল্প যাহাই হোক না কেন সকল প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নির্ভর করে তার হাতে। এ সব প্রতিষ্ঠানের ঋণ অনুমোদনের জন্য যত প্রকারের কারুকার্য প্রয়োজন বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি সব করে দিয়েছেন। তার হাত দিয়েই মেশিন আমদানীর নামে লুটেরা শিল্পপতিরা ওভার ইনভয়েসিং করে জনতা ব্যাংকের তথা দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তিনি সিভিল প্রকৌশলী হওয়ায় জনতা ব্যাংকের অর্থায়নের শিল্প সেক্টর তার একক নিয়ন্ত্রণে। যে কোন শিল্প প্রকল্পের সিভিল কাজের ঠিকাদার তার ছোট ভাই। বিল সংক্রান্ত কোন ফাইল অন্য কোথাও যায়না এবং বিশাল অংকের ঘুষ ছাড়া তার টেবিল পার হয়না।
২২ বৎসর যাবত শিল্পপতি নামক লুটেরাদের কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সুযোগ করে দিয়ে তিনি নিজে নিয়েছেন শত কোটি টাকা। অবৈধ টাকায় রাজধানীর মীরপুর,বসুন্ধরার বাড়ী, গুলশান ধানমন্ডীতে একাদিক বিলাসী ফ্ল্যাট ছাড়াও নিজ এলাকায় শত বিঘা জমি কিনেছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। ওষুধ শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত একটি বিতর্কিত শিল্প গ্রুপ গুলশানে তাকে ৩,৫০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছেন বলে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে। অবৈধ সম্পাদের অধিকাংশই তার পরিবারের সদস্যদের নামে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে দুদক তদন্ত করলে বহু কিছু বেরিয়ে আসবে বলে জনতা ব্যাংক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

Related Articles

Back to top button