পানিতে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন

নিউজ ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে অসময়ের ভারী বর্ষণে কপাল পুড়েছে কৃষকের। টানা বৃষ্টিপাতে হাজার হাজার একর ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এসব ফসলের মধ্যে আমন ধান, পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ও শাকসবজি রয়েছে।
পানিতে ধান কলিয়ে (অঙ্কুরোদগম) হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বছরের খোরাকি বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকের।
যশোর: জেলায় প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার হেক্টর জমির ধান ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানি ঢুকে পড়েছে বসতঘরেও। অসময়ের বৃষ্টিতে জেলার আট উপজেলার কর্তন করা আট হাজার হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত।

পানিতে তলিয়ে গেছে ২৫৩ হেক্টর জমির বীজতলা। এছাড়া গম ২০৬ হেক্টর, আলু ২৫০ হেক্টর, সরিষা নয় হাজার ৯১০ হেক্টর, মসুরি চার হাজার ১৬৩ হেক্টর ও চার হাজার ৬৫০ হেক্টর জমির সবজি পানিতে নিমজ্জিত।
মাগুরা: তিনদিনের টানাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মাগুরায়। বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে প্রধান ফসল রোপা আমন ধানসহ মসুর, রবি সরিষা, রসুন, পেঁয়াজ ও শাকসবজির ক্ষেত। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার চাষি।
কৃষক শাহ আলম বলেন, সাধারণত এক বিঘা (৪৬ শতক হিসেবে) জমিতে ৩০ মণ হারে ফলন হয়। সেখানে বৃষ্টির কারণে পানিতে ডুবে যাওয়ায় আট থেকে ১০ মণের মতো ধান ঝরে যাবে। বিচালিও পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
নড়াইল: জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত তিনদিনের টানাবৃষ্টিতে এক হাজার ৪৫ হেক্টর শীতকালীন ফসল, ১৬২ হেক্টর বোরো বীজতলা, ৫০ হেক্টর মরিচ, সাত হাজার ৭৩০ হেক্টর সরিষা, সাত হাজার ৫৪৫ হেক্টর মসুর ডাল এবং দুই হাজার ১০০ হেক্টর জমির গম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল): রোববার সকাল থেকে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে কৃষকদের চাষ করা প্রায় ৯ হাজার হেক্টর সরিষা, ৩৮ হেক্টর পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, খিরা, আলু, বাঁধাকপি ও ফুলকপি, টমেটো, লাউসহ প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে উপকূলীয় বরগুনায় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ফলে জমিতে থাকা আমন ধান ও খেসারি ডাল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। বৃষ্টি ও বাতাসে আমন ধানের গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খেসারি ডালের খেতগুলোতে পানি জমেছে।
কৃষক মো. আবুল আজিজ বলেন, এ বছর চার একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। এবার ফলন ভালো হবে বলে আশা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে অনেক ধান পড়ে গেছে। অর্ধেক ধানই নষ্ট হয়ে যাবে।