পশুরহাটে থাকবে চার স্তরের নজরদারি

কুরবানি ঈদে সক্রিয় থাকবে ভোক্তা অধিদপ্তর

প্রাচ্যবাণী প্রতিবেদন
কুরবানির পশুরহাটে প্রতারণা রোধে চার স্তরের নজরদারি করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পাশাপাশি হাটে অব্যবস্থাপনা, জাল টাকা শনাক্ত ও সড়কে পশুবাহী পরিবহণে চাঁদাবাজি বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এজন্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় কার্যালয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাট বসানোর নির্দেশনা এলে মাঠে নামবে অধিদপ্তরের তদারকি টিম। সঙ্গে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় অনিয়ম পেলে ভোক্তা আইনে অসাধুদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। বুধবার অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংস্থাটির পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, প্রতিবছর কুরবানির ঈদ ঘিরে সড়কে পশুবাহী পরিবহণে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। অনেক সময় তা জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রচার হয়। এজন্য এই বছর সড়কে চাঁদাবাজি রোধে ভোক্তা অধিদপ্তরের তদারকি টিম বিশেষ অভিযান চালাবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে এবার কঠোর ভূমিকা পালন করবে।

তিনি জানান, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ঢাকাসহ সব বিভাগীয় কার্যালয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পশুরহাট বসার নির্দেশনা এলেই মাঠপর্যায়ে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চার স্তরে নজরদারি করা হবে। এরমধ্যে রয়েছে-অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ক্রেতা সেজে হাটে অভিযান চালাবেন, পরিচয় দিয়ে হাটে সরেজমিন ভোক্তা বা ক্রেতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাবেন, ক্রেতা ও বিক্রেতার প্রতারণা রোধে জাল টাকা শনাক্তে সহায়তা করা হবে, কেউ যদি প্রতারিত হয়ে অধিদপ্তরের কার্যালয়ে অভিযোগ করেন সে ক্ষেত্রেও অভিযোগ আমলে নিয়ে অতি দ্রুত শুনানির মাধ্যমে সমাধান করা হবে। তদারকি করার সময় কোনো অনিয়ম পেলে প্রশাসনিকভাবে বা ভোক্তা আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, যে কোনো অভিযানের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। এ বিষয়ে জানানোর জন্য শিগগিরই বিভিন্ন এলাকার হাটসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করা হবে।

এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ভোক্তাকে সব ধরনের প্রতারণা থেকে রক্ষা করা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাজ। সঙ্গে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনাও দায়িত্ব। বিক্রেতাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়াও তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তাদের এ পদক্ষেপকে ক্যাব সাধুবাদ জানায়।

বুধবার রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটে কথা হয় ব্যাপারি নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদ ছাড়াও এখানে বেপারিরা বিভিন অঞ্চল থেকে গরু বা ছাগল এনে বিক্রি করেন। ঈদে বিক্রির পরিমাণ বাড়ে। তাই এ সময় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। মহাসড়কে ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিয়ে কুরবানির পশু হাট পর্যন্ত আনতে হয়। তিনি বলেন, পরিবহণ মালিক সমিতির নাম করে বিভিন্ন গ্রুপ টাকা তোলে। ফলে অনেক টাকা বাড়তি ব্যয় হয়। ঈদের সময় সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা দরকার। তাহলে আমরা নির্বিঘ্নে গরু ঢাকার হাটে তুলতে পারব। কম দামে পশু বিক্রি করতে পারব।

একই হাটে নীলফামারী থেকে আসা গরু বেপারি জামিল বলেন, কুরবানির ঈদ ঘিরে আমাদের মতো বেপারিদের অভিজ্ঞতা অনেক তিক্ত। দেখা যায়, ৫০টা গরু কিনে হাটে এনে বিক্রি করতে যে টাকা বাজেট থাকে, সড়কে চাঁদা দিতে গিয়ে তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়ে যায়। সড়কে চাঁদা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো বলাও এখন এক ধরনের বিপদ। তবে নামে-বেনামে পরিবহণ সমিতির লোকেরা টাকা তোলে। অনেক সময় সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে টাকা তোলা হয়। সরকারই পারে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।

Related Articles

Back to top button