জনতা ব্যাংক লুটপাটে জড়িতরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে!
দুদকের মামলায় আসামি কেরানীরা

বিশেষ প্রতিবেদন
জনতা ব্যাংক লুটপাটে জড়িত শিল্পপতি নামের গ্রাহক, দুর্নীতিবাজ ব্যাংকার ও বোর্ড সদস্য সবাই ধরা ছোঁয়ার বাইরে!
লোকাল অফিস শাখার নিউ জয় ট্রেডার্স :
খুলনার ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান নিউ জয় ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঢাকার লোকাল অফিস থেকে ৩০ কোটি টাকার সিসি লোন নেয়। অভিযোগ উঠলে প্রধান কার্যালয়ের তদন্ত দল দেখতে পান যে মজিবুর রহমান জমির মিথ্যা (ভ‚য়া কাগজ) দলিল দিয়ে এ ঋন নেন। তদন্ত দল এ জালিয়তির জন্য অন্য ১৪ জনের সাথে জিএম আউয়াল এবং ডিজিএম মতিনকে (বর্তমানে মতিঝিল শাখার ম্যানেজার) দায়ী করেন। বিশাল লেনদেনের বিনিময়ে প্রধান কার্যালয়ের ডিসিপ্লিনারী কমিটির প্রধান সদ্য সাবেক ডিএমডি জিকরুল এ দায় থেকে সাবেক জিএম আউয়াল এবং ডিজিএম মতিনকে অব্যাহতী দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে নিউ জয় ট্রেডার্স এর নিকট ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৫০ কোটি টাকা এবং গ্রাহক মজিবুর রহমান এর সাথে ব্যাংকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
লোকাল অফিস শাখা থেকে রপ্তানী বিলের পিসি ঃ
লোকাল অফিস শাখা থেকে রপ্তানী বিলের পিসি ( প্যাকিং ক্রেডিট ) বাবত বিভিন্ন ট্যানারী মালিকরা প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সীমান্ত লেদার , এক্সিম লেদার লিঃ , সিলভার ট্রেড, আল মদিনা ট্যেনারী , টোটাল ফ্যাশন , টেক্সনিট লিঃ । এরা রপ্তানী বিলের নামে বিদেশে টাকা পাচার করেছে বলে ব্যাংকাররা দাবী করছেন। তারা পিসির নামে স্বল্প মেয়াদী ঋণ নিয়ে এটাকে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণে পরিণত করেছেন এবং এখন খেলাপী। এর মধ্যে এক ট্যানারী মালিক ব্যাংকের টাকা মেরে চীনে ২য় বিয়ে করে সেখানে ঐ চায়নিজ বউকে গাড়ী বাড়ীও করে দিয়েছেন এবং এখন প্রায় চীনে বসবাস করেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন কাঁচা সবজী রপ্তানীকারক রয়েছেন যারা পিসির নামে স্বল্প মেয়াদী ঋণ নিয়ে এটাকে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণে পরিণত করেছেন। এ সব রপ্তানী বিলের সঠিক তথ্য বা প্রয়োজনিয় কাগজপত্র পর্যন্ত নেই ব্যাংকের কাছে।
এ সব লুটেরাদের কাগজ তৈরী করে দেয়ার ও সময়মত ফাইল গায়েব করার কাজ করেন লোকাল অফিসের এক ব্যাংক কর্মচারী যিনি প্রায় ২২ বছর যাবত একই ডেক্স কাজ করছেন। তিনি সিবিএর লোক তাই বদলী পর্যন্ত হয় না। এ কর্মচারী বিভিন্ন্ গ্রাহকের কাছ থেকে ১০ লাক টাকা উঠিয়ে সিবিএর সাবেক সভাপতিকে দিয়েছেন তাদের পছন্দের এক এজিএমকে লোকাল অফিসের রপ্তানী শাখায় দেয়ার জন্য। সমগ্র লেনদেনটি সুচারুভাবে করেছেন তৎকালিন ডিজিএম এখন রমনা শাখার প্রধান ।
জনতা ব্যাংক সুত্র জানিয়েছে খুলনা এলাকায় স্থাপিত ভবন শাখার একটি পেপার মিল প্রায় শত কোটি টাকার বিদেশী
মেশিন এনেছে যা প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী। এতে প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এ প্রকল্প কোন দিন বাস্তবায়ন হবে না এবং জনতা ব্যাংকও আর টাকা ফেরত পাবেনা। এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য বিশাল অংকের টাকা নিয়েছিলেন তৎকালিন ভবন শাখার জিএম ( পরবর্তীতে সাউথ বাংলা ব্যাংকের এমডি ) গোলাম ফারুক , পরিচালক মাহবুবুর রহমান হিরন এবং চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহিদুজ্জামান গং। ভবনের একাধিক গ্রাহক বিদেশ থেকে শিল্পের মালামাল আমদানী না করে লোকাল এলসি করে ব্যাংকের টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন বলে একাধিক ব্যাংকার জানান।