ইউক্রেনে অস্ত্র কেনার হিড়িক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দেওয়ার পর ইউক্রেনে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, উত্তেজনার মধ্যে অস্ত্র কেনার হিড়িক পড়েছে। জমিয়ে ব্যবসা করছে ইউক্রেনের অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। যুদ্ধের বাজারে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বন্দুক, গোলাবারুদ এবং স্নাইপার রাইফেল কিনতে ভিড় জমিয়েছে সাধারণ মানুষ। অস্ত্রের দোকানগুলোর সামনে দেখা গেছে লম্বা লাইন। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ান বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউক্রেনে জরুরি অবস্থা জারির পাশাপাশি দেশটির পার্লামেন্ট বুধবার একটি খসড়া আইন অনুমোদন করেছে। ওই খসড়া আইনে ইউক্রেনীয়দের আগ্নেয়াস্ত্র বহন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে দেশটির নাগরিকদের প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।

মূলত ওই খসড়া আইন অনুমোদনের পরই অস্ত্রের দোকানগুলোতে ঢোকে সাধারণ মানুষ।

বেশিরভাগ ইউক্রেনীয় ছেলে-মেয়েরা স্কুলেই অস্ত্র চালান শেখে। ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ এবং পূর্বাঞ্চলে মস্কো-সমর্থিত সশস্ত্র বিদ্রোহের পর প্রায় ইউক্রেনের চার লাখ মানুষের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কিয়েভে অস্ত্র কেনার জন্য উপড়েপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বন্দুকের দোকানে অ্যাসল্ট রাইফেলও বিক্রি হচ্ছে। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দোকানীরা। অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা এখন তুঙ্গে।

মধ্য কিয়েভের পুশকিন রাস্তায় বেসমেন্ট প্রাপোরশিক বন্দুকের দোকানে দাঁড়িয়ে দারিয়া অলেক্সান্দ্রিভনা নামে এক নারী বলেন, অবশ্যই আমি পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত। আমি ভালো কিছু আশা করছি। কিন্তু সবকিছুর জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছি।

অলেক্সান্দ্রিভনা জানান, ছয় মাস আগে মস্কোর সঙ্গে উত্তেজনা শুরুর সময় তিনি এবং তার স্বামী বন্দুক চালনা শেখা শুরু করেছিলেন। তাদের কাছে দুটি পিস্তল আছে। তিনি ৪০০টি রাবার বুলেট কিনতে এসেছিল।

তিনি বলেন, আমি সোমবার পুতিনের ভাষণ দেখেছি। আমি মনে করি তিনি এটা (হামলা) করার জন্য যথেষ্ট বোকা। তিনি ইউক্রেনীয় জনগণকে ঘৃণা করেন।

যুদ্ধের শঙ্কায় দুই সপ্তাহ আগে তিনি গাড়িতে কাপড়, ওষুধ, খাবার, পানি এবং অতিরিক্ত জুতা মজুত রাখেন।

তিনি বলেন, আমার দুই সন্তান শুধু ইউক্রেনীয় ভাষায় কথা বলে। তারা কোনো রুশ ভাষায় কথা বলে না। যদি কিয়েভ আমাদের জন্য আর নিরাপদ না হয় তবে আমরা চলে যাব।

কোথায় যাবেন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দেন, দেশের পশ্চিমে, কোথাও।

এদিকে, ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রথম ঘণ্টাতেই ৪০ ইউক্রেনীয় সেনা ও ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ।
এছাড়া প্রায় ৫০ জন রাশিয়ান সেনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার স্থল বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে ইউক্রেনে প্রবেশের কয়েক ঘণ্টা পর এই ঘোষণা দেয় কিয়েভ। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Related Articles

Back to top button