আশ্রয়ণে ঠাঁই পাওয়া ৬০ পরিবারকে ঘর ছাড়তে হুমকি

পাবনা জেলা প্রতিনিধি
পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই পাওয়া ৬০টি পরিবারকে প্রকল্প এলাকার ঘর ছাড়ার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওইদিন রাতেই পুলিশ প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পাশে সরকারি খাস জায়গায় আশ্রয়ণের ৬০টি ঘর নির্মিত হয়েছে। ওই ৬০টি ঘর এলাকার গৃহহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেখানে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে সেই খাস জমি আগে একটি পরিবারের ভোগ দখলে ছিল। সেই জায়গা অবমুক্ত করে ঘর নির্মাণের পর থেকেই ওই মহলটি নাখোশ। প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর ৬০টি গৃহহীন পরিবার সেসব ঘর বরাদ্দ পান।
কিন্তু ওই জমির আগের ভোগ দখলকারীরা বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না। তারা আশ্রয়ণের ঘরে থাকা লোকজনকে ঘর থেকে চলে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছেন। এতে অসহায় মানুষগুলো চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই পাওয়া গৃহবধূ সাবিনা খাতুন জানান, বুধবার (১৮ আগস্ট) সকালে তিনি ভাত রান্না করে খেতে বসেছিলেন স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু ওই সময়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েকজন তাদের হুমকি দিয়ে যায়। হুমকিদাতারা বলেন, জায়গাটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। তাই সেখানে অন্য কেউ বসত করতে পারবেন না। প্রাণভয়ে সেদিন আর সকালের খাওয়াটা হয়নি।
একই রকম অভিযোগ করেন সেখানে বসবাসকারী রবিউল শেখ ও ভানু খাতুন। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি তাদের বলেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পর ঘর ছেড়ে চলে যেতে হবে। না হলে তাদের ঘাঁড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে।
লাগাতার হুমকি দেওয়ার পর ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বুধবার উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্প হয়েছে সেই জায়গাটি একটি খাস সম্পত্তি। তবে সে জায়গাটি আকু প্রামাণিক (মৃত) ভোগ দখল করতেন। তিনি মারা যাওয়ার পর ইসমাইল, নায়েব, ইমরান, আল-আমিন, ইসহাক আলীরা ভোগ দখল করতেন। তারা আকু প্রামাণিকের ওয়ারিশ (ছেলে ও নাতিরা)। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আশ্রয়ণের বাসিন্দারা অভিযোগ দেওয়ার পর তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। এজন্য তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনা জানান, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। তিনি এরইমধ্যে পাবনা সদর থানাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাই এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেউ দোষি হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।