অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো হয়েছে তেলের দাম: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, অযৌক্তিকভাবে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধিতে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহণ ব্যয় বাড়বে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় তেলের দাম বৃদ্ধি মানুষের জীবনযাপন আরও কঠিন করে তুলবে। ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নয় সেবার মনোভাব নিয়ে দেশ পরিচালনার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. নূরন্নবী মৃধার দলে যোগদান অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। এই অজুহাতে স্থানীয়ভাবে দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু করোনাকালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক কম ছিল, তখন তো কমানো হয়নি। তখন যে পরিমাণ টাকা লাভ হয়েছে সেই টাকা কোথায় গেল তা জানতে চান। তিনি বলেন, ভর্তুকি দিয়ে হলেও তেলের দাম সহনীয় রাখতে হবে।

জিএম কাদের বলেন, আইনের শাসন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৯টি দেশের মধ্যে ১২৪তম। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূচকে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। এটা খুবই দুঃখজনক।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ২১ বছর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থেকে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ১৩ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপির অবস্থাও এখন দুর্বল। কিন্তু ৩১ বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থেকে জাতীয় পার্টি এখনো রাজনীতিতে সক্রিয় আছে। কারণ জাতীয় পার্টির শেকড় অনেক শক্ত। দেশের মানুষ আবারও জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ জাতীয় পার্টির পতাকাতলে যোগ দিচ্ছেন। সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে দুটি দল দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে চলেছে। যত যোগ্যতাসম্পন্নই হোক না কেন, ঘুস আর দলীয় আনুগত্য না থাকলে কারও চাকরি হয় না। দলীয় পরিচয় না থাকলে মানুষ ব্যবসা করতে পারে না।

জিএম কাদের আরও বলেন, অনেকেই আঁতেল সাজতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে স্বৈরাচার বলেন। কিন্তু কেন স্বৈরাচার বলেন তার জবাব দিতে পারেন না তারা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে জাতীয় পার্টি হচ্ছে সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। তাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ বারবার জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের চেষ্টা করেও সফল হয়নি। বিএনপির আপসহীন নেত্রী মুচলেকা দিয়ে চিকিৎসার জন্য জেলখানার বাইরে আছেন। চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে বারবার সরকারের কাছে আবেদন করছেন। সে ব্যাপারে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলে থাকাবস্থায় ভয়াবহ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন চিকিৎসকরা জেলখানার বাইরে পল্লীবন্ধুর চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও সে সময় পল্লীবন্ধুর চিকিৎসার জন্য দলীয়ভাবে স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন খালেদা জিয়ার সরকার পল্লীবন্ধু এরশাদকে জেলখানার বাইরে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেয়নি। ’৯১ সালের পর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপি যে অন্যায় করেছিল, বর্তমানে তার প্রায়শ্চিত্ত করছে বিএনপি। বিএনপির আমলে জাতীয় পার্টির ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছিল, বিএনপি তার কিছুটা স্বাদ পাচ্ছে এখন। যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এমএ তালহা। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক নাটোর জেলা আহ্বায়ক অধ্যাপক আলাউদ্দিন মৃধা।

উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুদ্দিন খালেদ, আনোয়ার হোসেন তোতা, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এমএ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা, মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলী তিতাস মোস্তফা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মণ্ডল মানিক, হাফেজ কারি ইসারুহুল্লাহ আসিফ, কেন্দ্রীয় নেতা রেজাউর রাজি স্বপন চৌধুরী, শেখ সরোয়ার হোসেন, মো. ফারুক শেঠ, জাকির হোসেন, আলমগীর হোসেন, পেয়ারুল হক হিমেল, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, নুরুজ্জামান, রীনা আক্তার তুলি, নজরুল ইসলাম, আসমা আক্তার রুমি, সাদিয়া শারমিন রুনি, সীমানা আমির, জাতীয় মহিলা পার্টির নেত্রী রওশন মাহবুব, লুবনা আহমেদ, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ইব্রাহিম খান জুয়েল।

Related Articles

Back to top button